বাংলাদেশের আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় ১০টি স্থান

বাংলাদেশের আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় ১০টি স্থান



প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আমাদের চির সবুজের দেশ। এদেশে রয়েছে অসংখ্যা দর্শনীয় স্থান। এই সোন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।  নিচে বাংলাদেশের সেরা আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বলা হলো যা পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে অবস্থান করছে।

পেজ  সূচিপত্রঃ





কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতঃ


দেশের পর্যটকদের মধ্যে সর্বাধিক মানুষ ভ্রমণ করেন কক্সবাজারে। কক্সবাজারকে আবার পর্যটন রজধানীও বলা হয়। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে সারা বছরজুড়েই পর্যটকদের আনাগোনা। বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত,এ ছাড়াও এখানে আছে আরও অনেক দর্শণীয় স্থান ও স্থাপনা। বিভিন্ন উপজাতি বা ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর বসবাসে বৈচিত্রময় এই জেলার জনপ্রিয় স্থান গুলোঃ লাবনী বীচ, সুগন্ধা বীচ, হিমছড়ি, ইনানী বীচ, বৌদ্ধ বিহার, সোনাদিয়া দ্বীপ, মেরিন রোড, কুতুবদিয়া দ্বীপ ইত্যাদি।
                                             
                                                         

 সেণ্টমাটিনঃ

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরে উত্তর পূর্বাংশে একটি ছোট প্রবল দ্বীপ মাত্র ৮ কিলোমিটার। দ্বীপটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এ দ্বীপটি উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় ৫ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার লম্বা। সেণ্টমাটিন প্রবাল দ্বীপে প্রায় ৬৬ প্রজাতির প্রবাল, ১৮৭ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, ১৫৩ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবল, ২৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ১২০ প্রজাতির পাখি পাওয়া যায় এছাড়াও রয়েছে ১৯ প্রজাতির স্তন্যপয়ী প্রাণী।


কুয়াকাটা,পটুয়াখালীঃ

 
একই স্থানে থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগের বিরল সমুদ্রসৈকত পটুয়াখালীর কুয়াকাটা। পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় জায়গাটি রয়েছে। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটা সি বীচ, যা পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত। কুয়াকাটা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকন করা যায়। সমুদ্রের পেট চিরে সূর্য উদয় হওয়া এবং সুদ্রের দক্ষে সূর্যকে হারিয়া যাওয়ার দৃশ্য অবলোকন করা নিঃসন্দেহে দারুন ব্যপার।


 পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতঃ

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বন্দরনগরী চট্রগ্রামের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, যা কর্ণফুলী নদীর মোহনয় অবস্থিত। চট্রগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত পতেঙ্গা। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এর প্রচুর ক্ষতি হয়। সৈকতে আছে বার্মিজ মার্কেট। সেখানেও ঘুরে ফিরে পছন্দের কেনাকাটা সেরে নিতে পারেন। পতেঙ্গা সি বীচ এ সন্ধ্যার দিকে সূর্যাস্তের দৃশ্য মনকে আরো বেশি পুলকিত করবে।

বান্দরবনঃ

বান্দরবান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় শহর চট্রগ্রাম থেকে প্রায় ৭৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাংলাদেশের সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর জেলা হিসাবেও বান্দরবন জনপ্রিয়। মেঘ জমে থাকা পাহাড়চূড়া আর ঝুরি ঝরনার প্রশান্ত সৌন্দর্যে ডুব দিতে বান্দরবানে যান পর্যটকেরা। এখানকার নীলাচল থেকে নীলগিরী, মেঘলা থেকে মিরিঞ্জা পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। এখানকার প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কাঁড়ে এর সবুজে ঢাকা পাহাড়, উন্মত্ত জলপ্রপাত এবং ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠির মানষরা

শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজারঃ

শ্রীমঙ্গলে সবুজ চা-বাগানের পাশাপশি অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে ,তেমনি পাঁচ তারকা হোটেলসহ গড়ে উঠেছে অসংখ্য মানসম্পন্ন রিসোট। বছরজুড়ে পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় থাকা শ্রীমঙ্গল জনপ্রিয়তায় শীর্ষে। শ্রী মানে সুন্দর, আর মঙ্গল মানে কল্যাণ, সুন্দর আর কল্যাণের মিশ্রনে বাংলার প্রাণ প্রকৃতির এক নীলা ভূমি মৌলভীবাজারের এই উপজেলা। এখানে সাতরংয়ের চা অনেক বিখ্যাত।

 সাজেক উপত্যকাঃ

সাজেক উপত্যকার অবস্থান রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় হলেও যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। পাহাড়ের চূড়ায় সাদা মেঘের আনাগোনা সাজেককে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। ১০টি ভাষাভাষীর ১১টি জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক কৃষ্টি এবং প্রকৃতির অপার সৃষ্টি এই জেলা বাংলাদেশের পর্যটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সাজেকের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান গুলোর মধ্যেঃ  ১।ঝুলন্ত সেতু ২।রাজবন বিহার ৩।কাপ্তাই বাঁধ ৪।চিৎমরম বৌদ্ধ বিহর ইত্যাদি।

সোনারগাঁ,নারায়ণগঞ্জঃ


বাংলাদেশের লোকশিল্পের সংরক্ষণ, বিকাশ ও সর্বসিধারণের মধ্যে লোকশিল্পের গৌরবময় দিক তুলে ধরার জন্য ১৯৭৫ সালে শিল্পাচার্য জয়নুলের উদ্যোগে সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে সরকার। এখানে সংরক্ষিত রয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের হাতে ঐতিহ্যবাহী প্রায় পাঁচ হাজর নিদর্শন।

 জাতীয় চিড়িয়াখানা,ঢাকাঃ


বনের বাঘ-সিংহ খাঁচায় এসে পেয়েছে নানান নাম। বেঙ্গল টাইগার দম্পতির নাম যেমন টগর আর বেলি, তেমনি ফাল্গুনী নামটি জলহস্তির। তাদের দেখতেই বছরজুরে দর্শনার্থীদের ভির লেগে থাকে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। ২ পুকুর সহ ১৮৬ একরের এই চিড়িয়াখানায় শতাধিক প্রজাতির পশুপখি আছে। এইখানে প্রতিদিন প্রায় গড়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল দশহাজারের ও অধিক।

সুন্দরবনঃ

সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেশের প্রকৃতি ও প্রাণী প্রেমী মানুষকে সব সময় আকর্ষণ করে। তাই সমুদ্রের তীরবর্তী ম্যানগ্রোভ বন সন্দরবন দেখতে দেশের আনাচেকানাচে থেকে পর্যটকেরা ছুটে যান। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বা লাবন্য বন। সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় দশহাজার বর্গকিলোমিটার যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে। এটি প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণীর আবাসস্থল। সুন্দরী গাছের নামান সারে এই বনকে বলা হয় সুন্দরবন।


                 লেখকঃ শাহনেওয়াজ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url