ঘড়ে বসেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের সহজ উপায়

 ঘড়ে বসেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের সহজ উপায়

জাতীয় পরিচয়পত্র্র সংশোধন করার নিয়ম ও অনলাইনে ভোটার আইডি কর্ড সংশোধন করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় আপনাকে স্বাগতম। নিজে নিজে আইডি কার্ড সংশোধন করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি পর্যাক্রমে সাজানো হলো। ভোটার আইডি কার্ড এর যেকোন ভুল এখন অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে সংশোধন করা যায় ঘড়ে বসেই।

পেজ সূচিপত্রঃ

জাতিয় পরিচয়পত্র সংশোধনের নিয়মঃ

জাতিয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইট টি ভিজিট করুন। এখন NID নাম্বার, জন্ম তারিখ দিয়ে একাউন্ট রেজিস্টার করুন । তারপর আপনারঠিকানা, মোবাইল নাম্বার এবং ফেইস ভেরিফিকেশন করে একাউন্টে লগইন করুন। 

একাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনার NID একাউন্টের ড্যাশবোর্ড থেকে এডিট প্রোফাইলে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করুন।সবশেষ সংশোধন ফি জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন জমা দিন।আবেদন এপ্রোভ হলে প্রোফাইল মেনু থেকে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে সংশোধিত NID Card Download করুন।

ভোটার আইডি সংশোধন আবেদন জমা দেয়ার গ খেয়াল রাখতে হবে যাতে চাহিত সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করতে হবে। আপনার ভোটার আবেদনে যে তথ্য পরিবর্তন করতে চান তার সত্যতা প্রমাণ করতে সত্যায়িত কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দিতে হয়।

আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন সামঞ্জস্য এবং বৈধ্য হলে সাধারণত ২৫দিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন অনুমোদন পেয়ে যায়। তবে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এই অনুমোদনের সময়সীমা পরিবর্তন হতে পারে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগেঃ

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে, তা নির্ভর করবে জাতীয় পরিচয়পত্রের কি ধরনের তথ্য পরিবর্তন করা হবে তার উপর। NID Card সংশোধন করতে শিক্ষাগত যোোগ্যতা সনদ, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ই-পাসপোর্ট প্রমাণ হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

 উপরে বর্নিত মৌলিক ডকুমেন্ট গুলো না থাকলে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এফডেভিট (হলফনামা), নাগরিক সনদ,ওয়ারিশ সনদআপলোড করতে হবে। আইডি কার্ডে স্বামীর নাম সংশোধন (পরিবর্তন) করতে কাবিন নামার প্রয়োজন হয়। 

তেমনি ভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র রক্তের গ্রুপ না দেয়া থাকলে তা যুক্ত করতে অথবা (পরিবর্তন) করতে মেডিক্যাল ক্লিনিক হতে রক্তের গ্রুপিং টেস্ট রিপোর্ট আপলোড করতে হয়। ঠিকানা সংশোধন করতে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা ইউটিলিটি বিলের কাগজ জমা দিতে হবে।

ভোটর আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়মঃ

অনলান ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আপনাকে প্রথমে এনআইডি ওয়েবসাইটে আপনার NID Number, জজজনন্মম ততারিখ এবং একটি সিকিউরিটি ক্যাপচা পূরণ করে অ্যাকাউন্ট  রেজিস্টার করতে হবে। তারপর ফেস ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট লগইন করুন। আপনার প্রোফাইলের এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিবর্তন করে আবেদন জমা দিন। 

সবার বুঝার সুবিধার জন্য বিষয়টি কয়েকটি ছোট ছোট ধাপে বিভক্ত করা হয়েছে। চলুন আইডি কার্ড সংশোধন করার পুরো প্রকিয়াটি ধাপে ধাপে দেখে নেয়। 

Step1:অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার

জাতীয় পরিিচয়পত্র ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করর জন্য প্রথমে ভিজিট কবতে হবে ওয়েবসাইটে। ভোটার আইডি কার্ডের নম্বার, জন্ম তারিক, ঠিকানা, মোবাইল নম্বার ভেরিফিকেশন করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।

step2:ফি প্রদান

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দিতে হবে। সংশোধন ফি সংশোধনের ধরণ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন হয়।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগেঃ

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে সর্বনিম্ন ২৩০ টকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৩৪৫ টাকা ফি প্রদান করতে হয়। আবেদনের ধরণের উপর সংশোধন ফি নির্ভর করে। ভোটার আইডি কার্ড সংংশোধন ৩টি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত-

  • ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
  •  অন্যান্য তথ্য
  • ঠিকানা পরিবর্তন

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি কত তা উপস্থাপন করা হলোঃ

  1.  ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন করতে ২৩০টাকা 
  2. অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে ১১৫ টাকা
  3. উভয় তথ্য সংশোধন করতে ৩৭৫ টাকা
  4. আইডি কার্ড রিইস্যু করতে (urgent) ৩৭৫ টাকা
  5. আইডি কার্ড রিইস্যু করতে (regular) ২৩০ টাকা

এন আইডি কার্ডের সংশোধন ফি বিকাশ, নগদ ও রকেট মোবাইল ব্যাংকিং ব্যাবহার করে পরিশোধ করা যায়।

ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধনঃ

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখে ভুল থাকলে তা পরিবর্তন করার জন্য নির্বাচন ওয়েবসাইটের ভোটার আইডি পোর্টালে লগইন করুন। তারপর প্রোফাইল থেকে ব্যক্তিগত তথ্য অপশন থেকে এডিট বাটনে চেপে জন্ম তারিখের ঘরে টিক চিহ্ন দিয়ে, আপনার চাহিত জন্মতারিখ লিখুন।

সংশোধন ফি পরিশোধ করে আবেদন জমা দিন। ডকুমেন্ট আপলোড করার সময় আপনার চাহিত জন্ম তারিখ প্রমানিত হয় এমন প্রমানপত্র জমা দিন। জন্ম তারিখ সংশোধন করতে বেশি কার্যকরি ডকুমেন্ট হলো SSC, HSC and JSC Board Certificate. শিক্ষাগত সনদ না থাকলে পাসপোর্ট কংবা ড্রাইভিং লাইসেনস আপলোড দিলেও অনুমোদন পাওয়া যায়।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তনঃ

জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবরর্তন করারর জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায় না। ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য ভোটার এলককা স্থানান্তর ফরম পূরণ করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়। এই ঠিকানা পরিবর্তন ফরম ১৩নং ফরম বলা হয়।

ভোার এলাকা পরিবর্তনের যথার্থ কারণ ও প্রমণ থাকলে সহজেই জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা পরিবর্তন করা যায়। আগের ঠিকানায় কত সময় ধরে বসবাস করছেন, বর্তমানে যে এলাকায় ভোটার স্থানান্তর করছেন তার কারণ উল্লেখ করতে হয় আবেদন ফরমে।

ভোটার এলাকা পরিবর্ত ফরম pdf

অনলাইনে জাতিয় পরিচয় পত্রের প্রায় সকল তথ্য পরিবর্তন, সংশোধন করার অপশন থাকলেও ভোটর এলাকা পরিবর্তন করার বিষয়টি এখন অফলাইন ভিত্তিক রয়ে গেছে। ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হলে Voter Area Migration From পূরণ করে যে এলাকায় ভোটার হতে চান সে এলাকার নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।

জাতিয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কত দিন লাগেঃ

জাতিয় পরিচয়পত্র সংশোধন হয়ে রিইসু হতে আনুমানিক ৬০ দিন সময় লাগে। তবে এটি নির্ভর করে আবেদনের ধরণ ও ক্যাটাগরির উপর। অনলাইনে উপযুক্ত প্রমানপত্র আপলোড করে সঠিক ভাবে আবেদন করার পর ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যেই আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়।

আবেদন ক্যাটাগরি অনুসারে কিছু কিছু আবেদন থানা বা উপজেলা নির্বাচন অফিসে নিষ্পত্তি হয়। কিছু কিছু  আবেদন এপ্রোভ হয় জেলা নির্বাচন অফিসে। জটিল আবেদন গুলো আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এমনকি নির্বাচন কমিশনের মহা সচিব নিজে অনুমোদন করে থাকে। তাই ক্যাটাগরি অনুসারে সংশোধনের সময় কাল ভিন্ন হয়।

ভোটার আইডি কার্ড কতবর সংশোধন করা যায়ঃ

আইডি কার্ড সংশোধনের কোন সীমা এখনো নির্ধারন করা হয়নি। তবে একত্ব তথ্য একবার পরিবর্তন করতে পারবেন। প্রথমবার তথ্য সংশোধনের জন্য ২৩০ টাকা, দ্বিতীয় বার (একবার যা সংশোধন হয়েছে তা ছাড়া ) ৩৪৫ টাকা এর পর প্রতিবার ৪৬০ টাকা ফি দিতে হবে

ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে রক্তের গ্রুপ যুক্ত বা পরিবর্তন করবেনঃ

ভোটার আইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ থাকা জরুরি। কোন জরুরি মূহূর্তে আইডি কার্ড দেখেই রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানতে পারবেন। আইডি কার্ডে রক্তে গ্রুপ যুক্ত বা পরিবর্তন করতে স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে Blood group Test Report আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।

মোবাইল নম্বার পরিবর্তন করবো কি করেঃ

আইডি কর্ডের মোবাইল নম্বার পরিবর্তন করার জন্য NID Website এ রেজিস্ট্রেশন করার সময় ফোন নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে OTP পাঠানো সে ধাপে মোবাইল পরিবর্তন করুন বাটনে চেপে আপনার নতুন মোবাইল নম্বার দিলেই মোবাইল নম্বার পরিবর্তন হয়ে যাবে।


                                     লেখকঃ শাহনেওয়াজ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url